জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: ‘আমার পিছনে বহুত মানুষ লাগছে, কিন্তু কিছুই ছিঁড়তে পারেনি। এইসব ভিডিও বা নিউজ করে কোন কিছুই করতে পারবেন না। এইগুলো সব খালি খালি, কোনভাবে আমার কিছুই করতে পারবেন না।’ এভাবেই দাম্ভিকতার সাথে কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের চিংগড়ী গ্রামের অপূর্ব মন্ডল অপু নামের এক কথিত চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে চিংগড়ী গ্রামের চিকিৎসকের চেম্বারে এঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ১ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কথিক ওই চিকিৎসকের চেম্বারে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক যান। তিনি সাংবাদিকদের দেখেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায় সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে ছবি বা ভিডিও করতে নিষেধ করে। এ সময় ওই চিকিৎসক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলে, ‘আমার পিছনে বহুত মানুষ লাগছে, কিন্তু কিছুই ছিঁড়তে পারেনি। এইসব ভিডিও বা নিউজ করে আমার …… ছিঁড়তে পারবেন না। এইগুলো সব খালি খালি।’ সাংবাদিকরা ডাক্তারি সনদ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কেন দেখাবো, প্রয়োজনে ড্রাগ সুপারকে দেখাবো। আপনারা যা পারেন করেন।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান হোসেন জানান, কথিক ওই চিকিৎসকের এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকলেও নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যবহার করে সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। নিজের ওষুধের দোকানে বসে রোগী দেখেন তিনি এবং ওষুধ বিক্রিও করেন তিনি। এছাড়া প্যাকেটের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি দাম রাখা, অ্যান্টিবায়োটিক লেখাসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সাংবাদিকরা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে ওই চিকিৎসকের কার্যালয়ে যাই। তিনি এসময় সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমলক আচরণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিংগড়ী, নবুখালী ও কাকইবুনিয়া একাধিক ব্যক্তি বলেন, কয়েক মাস আগেও অপু নামের ওই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাদের হুমকি-ধামকি ও মামলা ভয় দেখায়। তাই আমরা কিছু বলার সাহস পাই না। তবে আমরা অপচিকিৎসকের বিচার চাই।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মঈনুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি দেখেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।